ইসলাম ডেস্ক: ওলামায়ে সূ তথা অসৎ আলেম সম্পর্কিত বিবরণ- “আলেমদের পক্ষ হতেই ফেত্নার প্রাদুর্ভাব ঘটবে এবং তারাই আবার সেই ফেতনায় পতিত হবে।” এর অর্থ হচ্ছে, আলেমগণ হেদায়াতের পথ ছেড়ে যখন বিপদগামী হয়ে পড়বেন তখন দুনিয়াতে ভয়াবহ ফেত্না-ফাসাদ দেখা দিবে। পরে তার প্রতিরোধের জন্য আবার আলেমগণই রুখে দাঁড়াবেন। কিংবা এই হাদীসের অর্থ এমনও হতে পারে যে, আলেমগণ দুনিয়াদার ও জালেমদের সহযোগিতা করবে এবং অর্থের লোভে পার্থিব স্বার্থের অনুকূলে মাসআলা বলবে। পরে আবার সেই মাসআলা দ্বারাই দুনিয়াদারগণ তাদের বিপদে ফেলবে।
দুনিয়াদার আলেমদের ব্যাপারে ইবনে মাজাহ শরীফে বর্ণিত হাদীস-আমার উম্মতের মধ্যে ভবিষ্যতে এমন লোক পয়দা হবে, যারা দীনের জ্ঞান লাভ করবে (এই সকল লোকেরাই আবার বাদশাহদের কাছে গমন করবে) এবং নিজেদের সম্পর্কে এইরূপ দাবি করবে যে, আমরা মালদারদের কাছে গমন করি বটে, তবে আমরা দুনিয়া হাসিল পূর্বক নিেেজদের দীন রক্ষা করে তাদের কাছ হতে পৃথক হয়ে যাই। (অতঃপর তিনি আরো এরশাদ করেন) অথচ এইরূপ হওয়া সম্ভব নয় যে, দুনিয়াদারদের নিকট গমন করার পরও নিজেদের দীন নিরাপদ থাকবে। যেমন কাতাদ বৃক্ষ (এক প্রকার কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ) হতে কাঁটা ব্যতীত অন্য কিছুই পাওয়া যায় না। তদ্রূপ বিত্তবানদের নিকট হতে গোনাহ ছাড়া অন্য কিছুই আশা করা যায় না।
যে সকল আলেম পার্থিব স্বার্থে বিত্তবানদের কাছে গমন করে, তারাই ওলামায়ে সূ (বা নিকৃষ্ট আলেম)। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে তারা স্বীয় আত্মমর্যাদা
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, আলেমগণ যদি তাদের এলেম হেফাজত করে উপযুক্ত পাত্রে তা ব্যয় করতেন, তবে তারা জামানার সরদার বা শেষ্ঠ ব্যক্তিতে পরিণত হতেন। তবে তারা পার্থিব স্বার্থে তা দুনিয়াদারদের পিছনে ব্যয় করছে। ফলে দুনিয়ার মানুষের কাছে তারা নিকৃষ্ট ও হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছে। (মেশকাত)
সাধারণ মানুষের ন্যায় আজকাল আলেমগণও আখেরাতের ভাবনা পরিত্যাগ করে অস্থায়ী দুনিয়া অর্জন করাকেই এলেমের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেতেছে। বর্তমানে তারা রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সুনাম-সুখ্যাতি ও টাকা-পয়সা অর্জনের পিছনে বেশ তৎপরতা চালাচ্ছে। অপরদিকে সত্যিকার অর্থে যারা মানুষকে দীনের পথে দাওয়াত দিচ্ছে তাদের সংখ্যা খুবই নগণ্য। একটু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই দেখা যাবে যে, আজকাল ওয়াজ মাহফিল ও সমাবেশগুলোতে রাসূল-এর তরিকার পরিবর্তে মানবরচিত মতবাদের প্রতিই দাওয়াত দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply