অগ্রযাত্রা সংবাদ ঃ
উপমহাদেশের প্রাচীন শ্রেষ্ঠ গ্রাম রাজনগর থানার পাঁচ গাও। সিলেট বিভাগের প্রথম সাংবাদিক, সম্পাদক ও সাংবাদিকতার জনক গৌরিশংকর ভট্টাচাৰ্য পাচ গাঁও এর
সন্তান। পাঁচ গাঁও এর আরেক রত্না ও উপমহাদেশের একমাত্র মহিলা নেত্রী অগ্নিকন্যা লীলা রায় (নাগ) যিনি বৃটিশ বিরােধী আন্দোলনে ১০ বৎসরের অধিককাল কারাবরণ করে ইতিহাসে অম্লান হয়ে আছেন। বৃটিশ বিরােধী আন্দোলনে সমরাস্ত্রে অন্যতম যােগান দাতা হিসেবে পাচ গাঁও কর্মকারগণ স্মরণীয় হয়ে আছেন। উপমহাদেশে অন্যতম কর্মকার জনার্দন কর্মকার মােঘল আমলে মুর্শিদাবাদে জাহান কোষা তােপ নির্মাণ করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় গিয়ে কালে জমজম ও বিবি মরিয়ম নামে দুইখানা কামান প্রস্তুত করে বৃটিশদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পাঁচ গাঁও এর লৌহ শিল্পীরা উপমহাদেশে অন্যতম জাহাজ নির্মাতা হিসেবে সিলেট বিভাগের একচেটিয়া আধিপত্য ছিল। বাংলাদেশের প্রথম মহিলা সম্পাদিত পত্রিকা জয়শ্রী লীলা নাগ সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে তিনি প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ছাত্রী হিসেবে সহশিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৬ সালে ঢাকায় উপমহাদেশের প্রথম ছাত্রী সংঘ দীপালি ছাত্রী সংঘ লীলা রায় গঠন করেন। সিলেট বিভাগের প্রথম দৈনিক
পত্রিকা দৈনিক বলাকার সম্পাদক কালি প্রসন্ন দাস পাচ গাও এর কৃতি সন্তান। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট গিরিশ চন্দ্রনাগ ১৮৮৫ সালে গ্রাজুয়েট প্রাপ্ত হন। উল্লেখ্য যে তিনি অগ্নি
কন্যা লীলা নাগের পিতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ৫৯ জন নর নারী পাঁচগাঁও থেকে জীবন দিয়েছে।
উপমহাদেশের অন্যতম অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ উন্নয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডঃ কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ পাঁচ গাঁও এলাকার বাসিন্দা। এই গ্রামের অন্যান্য
ব্যক্তিত্বরা হচ্ছেনঃ মৌলভীবাজার কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হরকিংকর দাস,লেখক সুরেশ চন্দ্র চক্রবর্তী, লেখক বিনােদ রাম দাস, সঙ্গীত বিশেজ্ঞ গােলক চান
ঘােষ, সাহিত্যিক জয়কৃষ্ণ তর্কবাগীশ, লেখক হরিকান্ত ন্যায় বাগীশ, প্রাবন্ধিক হারান চন্দ্র দাশ, সাংবাদিক ও এ্যহস্পর্শ পত্রিকার সম্পাদক যােগেন্দ্র চন্দ্র সেন, প্রজাপতি দাস এবং বিপ্লবী সুধীর চন্দ্র নাগ প্রমুখ। পাচ গাঁও ইউনিয়নের ভূমিউড়া গ্রাম এককালে ইটারাজ্যের রাজধানী ছিল। ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে ১৯৬১ সালে তাম্রফলক পাওয়া যায়। সিলেট অঞ্চলের গ্রামাঞ্চলে সর্বপ্রথম বাবু হরকিংকর দাস পাঁচ গাঁও গ্রামে
একটি মধ্য ইংরেজী স্কুল প্রতিষ্ঠিত করেন। ১৯৩৮ সালে লীলা নাগ নিজের মায়ের নামে কুঞ্জলতা প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। বর্তমানে পাঁচ গাঁও নামে একটি ইউনিয়ন হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। এখানে একটি
হাসপাতাল পােস্ট অফিস, একটি মহিলা কলেজ, সরকারী প্রাথমিক স্কুল, হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা লাভের মধ্য দিয়ে প্রাচীন পাচ গাও উপমহাদেশের প্রাচীন শ্রেষ্ঠ গ্রাম হিসেবে
আসন করে নিয়েছে তা বলা যেতে পারে।
ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। অগ্রযাত্রা সংবাদের সাথেই থাকুন।
তথ্য সূত্রঃ মৌলভীবাজার জেলার ইতিহাস
Leave a Reply