কমলগঞ্জ, (মৌলভীবাজার)
মৌলভীবাজারে এবারের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় কৃষি ও মৎস্য খাতের দুটিই ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চলতি বন্যায় জেলায় আউশ ফসল তলিয়ে গেছে ও ভেসে গেছে মাছ। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ এনে মাছের খামর করলেও বন্যায় ভেসে গেছে সব মাছ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও মৎস্য চাষিরা।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, ঈদের দিন থেকে উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে জেলার ৭টি উপজেলায় বন্যা হয়। এখন আবার গত কয়েকদিনর বৃষ্টিতে আবার বন্য হয়েছে। বন্যার পানিতে আউশ ফসলের মাঠ তলিয়ে যায়। একই সাথে ফিসারির মাছ ভেসে যায়। মৎস্য খামারিরা শত চেষ্টা করেও মাছ আটকে রাখতে পারেননি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় ৬হাজার ১৩২ হেক্টর জমির আউশফসল সহ বিভিন্ন ধরনের সবজি বন্যায় তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করা হবে।
জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, চলতি বন্যায় জেলায় প্রায় ১হাজার ফিসারির ৪কোটি ১৮ লাখ টাকার মাছ ভেসে যায়। একই সাথে ৭১ লক্ষ টাকার পোনামাছ ভেসে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তালিকা করে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষক মর্তুজ মিয়া বলেন, আমি ঋণ করে ৩ একর জায়গায় আউশ ফসল চাষ করছিলাম। সম্প্রতি বন্যায় আমার ফসল তলিয়ে যায়। পানি কমার পর ধানের সবচারা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে।
জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাইক্কা বিলের মৎস্য খামারি আদিল মিয়া বলেন, ২ লক্ষ টাকা দিয়ে ২টা ফিসারি লীজ নেই। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করি। সম্প্রতি বন্যায় ২টা ফিসারির মাছ ভেসে গেছে। ছোট মাছের পাশাপাশি বড়বড় রুই, কাতলাও ভেসে গেছে। কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করবো এই চিন্তায় নির্ঘুম রাত যায় আমার।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শাহনেওয়াজ সিরাজী বলেন, জেলায় প্রায় ৫কোটি টাকার মাছ বন্যায় ভেসে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে সহোযোগিতা করার চেষ্টা করবো।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, জেলায় বন্যায় প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমির আউশফসলসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি তলিয়ে গেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করছি। মুগডাল ও বিভিন্ন ধরনের সবজির বীজ কয়েকদিনের মধ্যে কৃষকদেরকে দেওয়া হবে।
Leave a Reply