
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ঃ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের চিতলীয়া প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ, স্থায়ী অফিস উদ্বোধন, শীতবস্ত্র বিতরণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) চিতলীয়া প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের আয়োজনে চিতলীয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সংলগ্ন মাঠে দিনব্যাপী আয়োজনে প্রায় দুই হাজার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে এলাকার প্রায় চার শতাধিক অসহায় ও নিম্নআয়ের পরিবারের মধ্যে শীতবস্ত্র ও কম্বল বিতরণ করা হয়।
চিতলীয়া প্রবাসী কল্যাণ সংগঠনের কার্যকরী কমিটির সভাপতি মো. নূরুল হকের সভাপতিত্বে ও পল্লী চিকিৎসক মো. আবু বক্কর এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা আহমদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কামারছড়া বন রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা মো. আহমদ আলী, কমলগঞ্জ থানার এসআই মো. আমির হোসেন, নাজির হাসান ইসলামীয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাওলানা মো. শামসুল হক প্রমুখ।
প্রধান অতিথি এই মহতী উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজ এলাকার মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসছেন, যা অত্যন্ত অনুপ্রেরণামূলক।
উদ্বোধন ও শীতবস্ত্র বিতরণ শেষে এক দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সবশেষে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন উপস্থিত দর্শকরা। সংগঠনটির এই বহুমুখী উদ্যোগ স্থানীয় মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
নোট ঃ ছবি সংযুক্ত।
কমলগঞ্জে মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ দিনব্যাপী বাৎসরিক স্টুডেন্ট ক্যাম্প উদ্বোধন
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ঃ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ দিনব্যাপী বাৎসরিক 'স্টুডেন্ট ক্যাম্প'-এর উদ্বোধন হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় স্কুল কমপ্লেক্সে তাবু জলসার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে আয়োজন করা হয় বিলুপ্তপ্রায় ঐতিহ্যবাহী গাজির গীত পরিবেশনা। শিল্পীদের সুরের আবহে মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্প প্রাঙ্গণে। গাজির গীতকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অত্যন্ত জরুরি। সরকার সহায়তা দিলে তারা নতুন করে গাজির গীত মঞ্চায়নের উদ্যোগ নিতে প্রস্তুত।
আয়োজকরা জানান, বিদ্যালয়ে টানা পাঁচ দিনব্যাপী এই বাৎসরিক স্টুডেন্ট ক্যাম্পে বিদ্যালয়ের ৩৮ জন্য শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীরা এই দিনগুলোতে সকাল সাড়ে ৫টায় শরীর চর্চা দিয়ে শুরু করে রাত ১০টা পর্যন্ত খেলাধুলা, সাধারণ জ্ঞান চর্চা, প্রাত্যহিক জীবনে প্রয়োজনীয় কাজ, প্রাথমিক চিকিৎসা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ নানা কাজের মধ্য দিয়ে কাটাবে।
এছাড়াও ভাতৃত্ববোধ শিখবে, ব্যায়াম শিখবে, শৃঙ্খলা শিখবে। শিখানো হবে যা শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্যে দরকার। কিছু কলাকৌশল শিখানো হবে যা তাদের পরবর্তী জীবনে অনেক কাজে লাগবে।
জানা যায়, ১৯০৭ সালের ১ আগস্ট ইংল্যান্ডের ব্রাউনসি দ্বীপে ২০ জন বালককে নিয়ে প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলক ক্যাম্পের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী স্কাউট আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। শিশু, কিশোর-কিশোরী, শারীরিক, মানসিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও সামাজিক গুণাবলি উন্নয়নের মাধ্যমে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলায় স্কাউটিংয়ের অবদান সারা বিশ্বে স্বীকৃত।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক, অভিভাবক, সাংবাদিকসহ এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুুষ উপস্থিত ছিলেন। গাজির গীত উপস্থাপনার পর অতিথিরা বলেন, গ্রামীণ বাঙালির অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই লোকসংগীত এখন প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। একসময় শীত মৌসুমে বিভিন্ন গ্রামে গাজির গীতের আসর বসত, কিন্তু এখন তা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
শিক্ষার্থী হাসান আহমেদ বলেন, আমি এই ক্যাম্প সমাবেশে এসেছি। এখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশের জন্য কাজ করা যেতে চাই এবং ৫দিনের চ্যালেঞ্জ নিতে আমি প্রস্তুত।
মবশ্বির আলী চৌধুরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহমদ সিরাজ জানান, পাঁচ দিনব্যাপী স্টুডেন্ট ক্যাম্পে প্রতিষ্ঠানের ৩৮জন শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। চলতি মাসের ১৭ই ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মহাতাঁবু জলসার মধ্য দিয়ে পাঁচদিনের 'স্টুডেন্ট ক্যাম্প'-এর পরিসমাপ্তি ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, এই আয়োজন একটি স্বেচ্ছাসেবী, অরাজনৈতিক ও শিক্ষামূলক কর্মযজ্ঞ। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে স্কাউটিং শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক ও মানসিক দিকগুলো পরিপূর্ণ অন্তর্নিহিত ক্ষমতা বিকাশে অবদান রাখে, যাতে করে তারা ভারসাম্যপূর্ণ ব্যক্তি, দায়িত্বশীল নাগরিক এবং স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবে জীবনযাপন করতে পারে। মানবজীবনের একমাত্র ব্রত হল সেবা। মানবহৃদয়ের সব তৃপ্তি, সুুখ ও সাফল্য সেবার মধ্যেই নিহিত।